আপনি যদি সারাদিন আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকতে চান, তাহলে এখন থেকে এই আমলগুলো বাদ দিবেন না।
(১) ফজরের সলাত জামআতে পড়ুন।
জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়বে, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকবে…। (সহীহ মুসলিম: ১৩৬৮, ইফা)
(২) গাড়িতে, রাস্তায়, হাঁটতে অথবা যেকোন সময়ই হোক না কেন মুখে ইস্তিগফারকে আবশ্যক করে নিন।
আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদেরকে আযাব দেবেন এ অবস্থায় যে, তুমি তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং আল্লাহ তাদেরকে আযাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে। (সুরা আনফালঃ ৩৩)
এই আয়াতে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, রাসুল ﷺ আমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকাবস্থায় এবং আমরা যতক্ষণ ক্ষমা চাইতে থাকবো ততক্ষণ তিনি আযাব দিবেন না। এখন রাসুল ﷺ আমাদের মাঝে আর নেই, কিন্তু কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমা চাওয়ার পথ উন্মুক্ত থাকবে। তাই আযাব ইস্তিগফার করুন বেশি বেশি।
(৩) ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এই দো’আটি পড়তে ভুলবেন না।
আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঘর হতে কেউ বাইরে রাওয়ানা হওয়াকালে যদি বলে,
بِسْمِ اللّٰهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللّٰهِ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلاَّ بِاللّٰهِ
“আল্লাহ তা’আলার নামে, আল্লাহ তা’আলার উপরই আমি নির্ভর করলাম, আল্লাহ তা’আলার সাহায্য ব্যতীত বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারো নেই”, তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহ তা’আলাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, (অনিষ্ট হতে) তুমি হিফাযাত অবলম্বন করেছ। আর তার হতে শাইতান দূরে সরে যায়। (তিরমিযিঃ ৩৪২৬)
(৪) আয়াতুল কুরসী পাঠঃ
(ক) রাতে ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসী পাঠ করা। এতে আল্লাহর পক্ষ হতে তোমার জন্য একজন রক্ষক (ফেরেশস্তা) নিযুক্ত থাকবে এবং ভোর পর্যন্ত তোমার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। (সহিহ বুখারী: ২৩১১)
(খ) যে ব্যক্তি সন্ধ্যার সময় আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, সকাল পর্যন্ত তাকে জ্বিন শয়তান থেকে নিরাপদ রাখা হবে, আর যে সকালে পাঠ করবে তাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপদ রাখা হবে। (বুখারি, আত-তারীখুল কাবীর, ১/২৮, সহীহ)
(৫) তুমি প্রতি দিন বিকালে ও সকালে উপনীত হয়ে তিনবার করে সূরা কুল হুআল্লাহু আহাদ (সূরা আর-ইখলাস) ও আল-মু’আওবিযাতাইন (সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস) পাঠ করবে, আর তা হলে সবকিছু মোকাবেলার ব্যাপারে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে। (তিরমিযি: ৩৫৭৫, হাসান)
(৬) সকালে ও সন্ধ্যায় পূর্ণ ইয়াকীনসহ সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার পড়া।
“যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হবার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দু‘আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হবার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে। [সহীহ বুখারি: ৬৩০৬]
(৭) যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং বিকালে তিনবার এটি বলবে, কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না।
بِسْمِ اللّٰهِ الَّذِيْ لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِيْ الْأَرْضِ وَلاَ فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
আল্লাহ্র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”
[আবূ দাউদ, ৪/৩২৩, নং ৫০৮৮; তিরমিযী, ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৮; ইবন মাজাহ, নং ৩৮৬৯; আহমাদ, নং ৪৪৬।]
(৮) দিনের শুরুতে চার রাকআত সলাতুত দোহা পড়া।
উকবা ইবনু আমির (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহ ﷻ বলেন:
“হে আদম সন্তান, তুমি তোমার দিনের প্রথম ভাগে চার রাক’আত সালাত আমাকে প্রদান করো, দিনের শেষ ভাগ পর্যন্ত তোমার জন্য আমি যথেষ্ট থাকব (আমার কাছে তাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে)। হাদীসটি সহীহ। [মুসনাদ আহমদ 4/153, আলবানী, সহীহুল তারগীব 1/350।]
আল্লাহ আমাদেরকে সকাল সন্ধ্যার এই আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন।
লিখেছেন: এম ইকরামুজ্জামান আব্দুল বাতেন
Post Views:
২৮২