মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর সমর্থককে মারধর করে আহত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জুয়েল আহমদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ।
সোমবার বিকাল পৌনে ৫টায় পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ আলেপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ঠিকাদার মো. হেলাল মিয়ার ওই সমর্থক সায়েদুল হক সুমনের (৪৫) ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আলেপুর এলাকায় কিছুসময় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর প্রায় অর্ধশত সমর্থক কমলগঞ্জ থানায় গিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এ ঘটনায় সোমবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে একটি ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করতে সমর্থকদের সাথে নিয়ে গোবর্ধ্বনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে যান আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. জুয়েল আহমদ। এ সময় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ঠিকাদার মো. হেলাল মিয়ার সমর্থক সায়েদুল হক সুমনকে খেলার মাঠে পাশে দেখে নৌকা সমর্থক ময়নুল খাঁ তাকে ডেকে নৌকার বিপক্ষে কাজ করার কারণ জানতে চায়। কথাকাটির এক পর্যায়ে নৌকার আরেক সমর্থক মাজহারুল ইসলাম মারুফ স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক সায়েদুল হক সুমনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। খবর পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে নৌকার সমর্থকেরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহত সুমনকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। বিক্ষুদ্ধ স্বতস্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা এ সময় রাস্তা অবরোধ করে রাখলে কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সোমবার রাতে সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ঘটনায় আমার কাছে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্রোহী প্রার্থী মো. হেলাল মিয়া জানান, বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. জুয়েল আহমদের সমর্থকরা তার কর্মীর ওপর হামলা করছে। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কমলগঞ্জ থানা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে একটি লিখিত আবেদন করবেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. জুয়েল আহমদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। ফোনে তাকে না পাওযায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তার ঘনিষ্ট সুত্র জানিয়েছে পৌর নির্বাচনে সব প্রার্থীই স্বাধীনভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সায়েদুল হক সুমনের ওপর হামলা কারা করেছে তা তারা জানেন না।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার জানান, এ ঘটনায় আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে এ রকম একটি ঘটনার কথা শোনেছি। সাথে সাথে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘটনাস্থলে গেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
Post Views:
৫৮৩